খুঁজুন
শুক্রবার, ১৪ মার্চ, ২০২৫, ১ চৈত্র, ১৪৩১

শীতের পিঠা সমাচার

অধ্যাপক মো. মসিউল আযম
প্রকাশিত: সোমবার, ৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ৫:০২ অপরাহ্ণ
শীতের পিঠা সমাচার

শীত মৌসুমে রসের পিঠা। আবহমান কাল থেকেই যশোরের রয়েছে এর অতীত ইতিহাস ও ঐতিহ্য। আত্মীয়-স্বজনেরা এ সময়ে তাকিয়ে থাকেন কবে পিঠা আসবে, এর স্বাদ গ্রহণ করবো।

শৈশবে স্কুলের পাঠ্যবইয়ে একটি কবিতার কথা এখনা মনে পড়ে- ‘যশোর জেলায় আছে রে ভাই, পাটালী গুড়, খেজুর গাছ, ফরিদপুরের কি মজাদার, পদ্মা নদীর ইলিশ মাছ।’

এবার পিঠা খাওয়ার বাস্তব অভিজ্ঞতা আমি হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছি। ইতোপূর্বে এ ধারণা আমার ছিল না। সাধারণ মানুষের পিঠা খাওয়ার স্বাদ এখন নাগালের বাইরে।

কর্ম সুবাদে বর্তমানে আমার তিন মেয়ে জামাই, নাতি-নাতনিরা ঢাকার বাসিন্দা। এবার তারা পিঠা খেতে চেয়েছিল। ঢাকায় পিঠা খাওয়া বা পাওয়া যায়, কিন্তু মেয়েদের বাপের বাড়ির পিঠা, বিশেষ করে যশোরের পিঠার প্রতি রয়েছে বিশেষ দুর্বলতা। তাদের আবদার পূরণে পিঠার উপকরণ জোগাতে হিমশিম খাওয়ার জোগাড়। তাহলে সাধারণ মানুষ কীভাবে পিঠা খেতে পারবে?

আশির দশকে সপরিবারে বসবাস করতাম যশোর শহরের ঘোপ সড়ক ও জনপথ বিভাগের স্টাফ কোয়ার্টারে। শীতের সকালে শহরের আশে পাশে গ্রাম থেকে ছিকে-বাক কাঁধে নিয়ে রস বিক্রি করতে আসত চাষিরা। প্রতি ঠিলে রস পাওয়া যেত দশ-বারো টাকায়। আর দুধ কিনতাম পনেরো-ষোল টাকা সের। পাটালী কিনেছি প্রতি সের পঁচিশ-ত্রিশ টাকায়। তখন ১নং-২নং বলে কোনো পাটালী ছিল না, সবই ছিল ১নং।

পিঠা খেতে প্রায় পঞ্চাশ বছর পর এসে এখন দুই ঠিলে রস কিনেছি ৭০০/, দুধ চার কেজি ২৮০/-, চালের গুড়া তৈরি করতে আলো-চাল পাঁচ কেজি ৩৫০/-, পিঠা স্বাদ বাড়াতে দুই কেজি পাটালী ৬০০/-। ভাগ্যবশত বাড়ির নারিকেল গাছে দুটি ঝুনা নারিকেল পাওয়া গেছে বলে কিছুটা রক্ষা।

মাটির ছাঁচে তৈরি পিঠা একটি বড় টিনের হাঁড়িতে রাখা হয়। ভারী ওজনের সেই হাঁড়ি বহন করা আমার একার পক্ষে সম্ভব ছিল না। সেটি বহনের জন্যে সঙ্গী হিসেবে শক্তিশালী একজন প্রতিবেশীকে পাওয়া যায়। বাড়ি থেকে যশোর স্টেশন পর্যন্ত ইজি বাইক ভাড়া ২০০/-, যশোর থেকে ঢাকা-কমলাপুর স্টেশন পর্যন্ত দুজনের ট্রেনভাড়া ১,১০০/-, কমলাপুর স্টেশন থেকে ঢাকা মিরপুর পর্যন্ত সিএনজি ভাড়া ৫০০/- সর্বমোট ৩,৭৩০/-। এখন টাকার অংকে হিসাব করলে প্রতি পিস পিঠার মূল্য যাই পড়ুক, সেটি বড় কথা নয়। তবু মেয়ে জামাই, নাতি-নাতনিরা পিঠা খেতে চেয়েছে সেটি আমার কাছে বড় আনন্দের কথা।

গ্রামে এখন ঢেঁকির প্রচলন নেই। যশোরের এই ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে গ্রামের বাড়িতে ঢেঁকিঘর নির্মাণ করেছি। শীত মৌসুমে মহিলারা পালাক্রমে ঢেঁকি ব্যবহার করছেন। প্রতিদিন ভোর থেকে রাত পর্যন্ত আলো-চাল, কুমড়া বড়ির ডাল ইত্যাদি কোটায় ব্যস্ত থাকেন। তাদের বসার জন্যে আসন, বৈদ্যুতিক আলো, টয়লেট ব্যবস্থা করেছি, বাচ্চাদের খেলাধূলার জন্য আরও কিছু ভবিষ্যত কর্ম-পরিকল্পনা রয়েছে।

লেখক: প্রবীণ সাংবাদিক, কলাম লেখক ও উন্নয়ন কর্মী

লিচু বাগানে কুমড়া চাষে সফল স্কুল শিক্ষক জনি

আজকের বোচাগঞ্জ ডেস্ক
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ১৩ মার্চ, ২০২৫, ৪:৪৮ অপরাহ্ণ
লিচু বাগানে কুমড়া চাষে সফল স্কুল শিক্ষক জনি

oppo_0

দিনাজপুর জেলায় আম ও লিচু বাগানের সংখা অনেক। প্রতিটি বাগানের নিচের অংশে হাজার হাজার একর জমি ফাকা পড়ে থাকে। সেই পতিত(বাগানের নিচে)র জমিতে সাথী ফসল হিসেবে মিষ্টি কুমড়া চাষ শুরু করেছেন দিনাজপুরের বোচাগঞ্জ উপজেলার নেহালগাঁও উচ্চ বিদ্যালয়ের কৃষি শিক্ষক হুমায়ুন কবির জনি। প্রথমবার মিষ্টি কুমড়া চাষ করে তিনি পেয়েছেন সফলতা। মিষ্টি কুমড়া চাষ করে যথেষ্ট সাড়া ফেলেছেন তিনি। তার সফলতা দেখে আম/লিচু বাগানে কুমড়া চাষে আগ্রহী হচ্ছেন অনেক কৃষক। আম/লিচু বাগানে কুমড়া চাষে কৃষকদের উৎসাহিত করতে কাজ করছে কৃষি বিভাগ। জানা গেছে, হুমায়ুন কবির জনি দিনাজপুর থেকে ১ হাজার দুইশতটি বীজ কিনে এনে বাসায় চারা তৈরি করেন এবং এক একর জমির লিচু বাগানে সেই চারা রোপণ করেন। গত জানুয়ারি মাসে বিভিন্ন জাতের মিষ্টি কুমড়ার চারা রোপণ করে প্রতিটি কুমড়া গাছে ১০টির বেশি কুমড়ার অংকুর হলেও তিনি ৫ থেকে ৬টি কুমড়া সংগ্রহ করছেন। লিচু বাগানে হুমায়ুন কবির জনির মিষ্টি কুমড়া আবাদ দেখতে আসা কৃষক আঃ রহিম বলেন, ‘আমি ফেসবুকের মাধ্যমে জানতে পেরে আজ লিচুর বাগানে মিষ্টি কুমড়া চাষ পদ্ধতি দেখতে এসেছি। দেখে খুব ভালো লাগল। আমিও আগামী বছর আমার আম বাগনে মিষ্টি কুমড়া চাষ করব।’ কৃষি উদ্যোক্তা হুমায়ুন কবির জনি বলেন, ‘আমি লিচু বাগানে তিন জাতের মিষ্টি কুমড়া চাষ করেছি। এই কুমড়া আবাদ করতে আমার প্রায় ১ লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে। আমি আশা করি, এই মিষ্টি কুমড়া বিক্রি করে আমার প্রায় ৫ লক্ষ টাকার মতো আয় হবে।’ লিচু বাগানে মিষ্টি কুমড়া চাষের এই পদ্ধতি কোথায় থেকে পেয়েছেন, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি এই পদ্ধতি নিজে চিন্তা করে প্রয়োগ করেছি। কারণ লিচু বাগানের নিচের পতিত জমিটি সাধারণত পড়ে থাকে। তাই আমি প্রথমবার সেই পতিত জমিতে কুমড়া চাষ করেছি এবং সফলতা পেয়েছি।’ বোচাগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নয়ন কুমার শাহা বলেন, ‘বোচাগঞ্জ উপজেলার আটগাঁও ইউনিয়নে হুমায়ুন কবির জনি নামের এক কৃষক এক একর জমিতে প্রথমবারের মতো লিচু বাগানে কুমড়া আবাদ করেছেন। কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের পক্ষ থেকে আমরা তাকে কারিগরি পরামর্শ প্রদানসহ বিভিন্ন সার্বিক সহযোগিতা করে যাচ্ছি। আশা করছি ফলন ভালো হবে এবং কৃষক লাভবান হবেন। আমি হুমায়ুন কবির জনির এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই।

বোচাগঞ্জে প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে খামারী ও সুফল ভোগীদের মাঝে উপকরণ বিতরণ

মোঃ শামসুল আলম
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ১৩ মার্চ, ২০২৫, ৪:১৪ অপরাহ্ণ
বোচাগঞ্জে প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে খামারী ও সুফল ভোগীদের মাঝে উপকরণ বিতরণ

“আমিষেই শক্তি, আমিষেই মুক্তি” এই শ্লোগানকে সামনে রেখে দিনাজপুরের বোচাগঞ্জে বৃহস্পতিবার খামারী ও সুফল ভোগীদের মাঝে উপকরণ বিতরণ করেছে উপজেলা প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তর বোচাগঞ্জ।

সকাল ১১টায় উপজেলা প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তর হতে খামারী ও সুফল ভোগীদের মাঝে গবাদী পশু ও পাখির খাদ্য, মেডিসিন, ভ্যাকসিন, গবাদী পশু ও পাখির ঘর নির্মাণ উপকরণ, প্রযুক্তি উপকরণ, চপার মেশিন, বিতরণের অংশ হিসেবে ৩০জন জন সুফল ভোগীর প্রত্যেককে ১টি ট্রোলী, ১টি বেলচা, ২পিছ ফ্লোরমেট ও ১পিছ ল্যাক্টো মিটার মেশিন দেয়া হয়েছে। সুফল ভোগীদের মাঝে উপকরণ বিতরণ এর পূর্বে সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভায় উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ আবু কায়েস বিন আজিজ বলেন, আমরা খামারের উৎপাদন বৃদ্ধি করার জন্য খামারীদের বিভিন্ন ধরণের উপকরণ প্রদান করছি।

খামারীরা এই উপকরণ ব্যবহারের মাধ্যমে সুন্দর সাবলীল ভাবে খামার পরিচালনা করতে পারবেন। এতে গবাদী পশুর উৎপাদন অনেক বৃদ্ধি পাবে যা জাতীয় অর্থনীতিতে অনেক বড় অবদান রাখবে। আমরা আশা করব এই উপকরণ পেয়ে খামারীরা খামার করার প্রতি আরো বেশী উদ্বুদ্ধ হবে এবং প্রাণী সম্পদের সাথে আরও বেশী জরিত হবে। এসময় উপজেলা ভেটেরিনারী সার্জন ডাঃ নিহারঞ্জন প্রামানিক, উপজেলা প্রাণী সম্পদ সম্প্রসারণ কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ আসাদুজ্জামান রিমন, সেতাবগঞ্জ প্রেসক্লাবের সদস্য সচিব মোঃ শামসুল আলম সহ এলাকার সুধীজন উপস্থিত ছিলেন।

তিস্তাপাড়ের মানুষদের কথা শুনলেন পরিকল্পনা বাস্তবায়ন কর্মকর্তারা

নীলফামারী প্রতিনিধি
প্রকাশিত: বুধবার, ১২ মার্চ, ২০২৫, ৯:৩৯ অপরাহ্ণ
তিস্তাপাড়ের মানুষদের কথা শুনলেন পরিকল্পনা বাস্তবায়ন কর্মকর্তারা

তিস্তা নদীর সমন্বিত ব্যবস্থাপনা পুনরুদ্ধার’ শীর্ষক প্রস্তাবিত প্রকল্পের ওপর অংশীজনদের কথা শুনলেন পরিকল্পনা বাস্তবায়ন কর্মকর্তারা।

বুধবার (১২ মার্চ) বেলা সাড়ে ১১টায় নীলফামারী জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জেলা প্রশাসন ও ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ড এর আয়োজনে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
মতবিনিময় সভায় তিস্তাপাড়ের মানুষ, তিস্তা নদীরক্ষা আন্দোলনকারী, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ তাদের মতামত তুলে ধরেন।

এর আগে, শুরুতে প্রকল্প বাস্তবায়নকারী প্রত্যাশী ‘পাওয়ার চায়না’র পক্ষে তিস্তা মহাপরিকল্পনা প্রকল্পের সামগ্রিক বিষয় পাওয়ার প্লান্ট প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে তুলে ধরেন প্রকল্পের সিনিয়র এক্সপার্ট মকবুল হোসেন।

এতে বলা হয়, পাঁচ বছর মেয়াদি এই প্রকল্পে ১১০ কিলোমিটার নদী তীর সংরক্ষণ ও ড্রেজিং, ২২৪ কিলোমিটার বাঁধ নির্মাণ, মেরামত ও বাঁধের ওপরে রাস্তা নির্মাণ, ৬৭টি গ্রোয়েন নির্মাণ করার পাশাপাশি প্রায় ১৭১ বর্গকিলোমিটার ভূমি পুনরুদ্ধার করা হবে।

এছাড়াও প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে সুবিধা ভোগ করবে তিস্তাপাড়ের মানুষ বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও নদী গবেষক তুহিন ওয়াদুদ বলেন, তিস্তা হচ্ছে সারা বাংলাদেশের মধ্যে ভিন্নতর নদী এই নদীতে আমরা মার্চ মাসে গিয়ে একটা গ্রাম দেখলাম এপ্রিল মাসে গিয়ে আমরা হয়ত সেই গ্রাম টা খুঁজে পাবো না পানিতে চলে গেছে। আবার এপ্রিল মাসে গিয়ে দেখবো সেখানে চড় জেগে উঠেছে নদী নিয়ে আরও বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরেন। নদী পাড়ের মানুষদের জমির মালিকানা নিয়ে কথা বলেন এই নদী গবেষক।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ নায়িরুজ্জামান এর সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় উত্তরাঞ্চল পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রধান প্রকৌশলী মাহবুবর রহমান, পাওয়ার চায়নার কান্ট্রি ম্যানেজার হান কুন,

জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জহুরুল আলম, জেলা জামায়াতের আমীর আব্দুস সাত্তার, জাতীয় নাগরিক কমিটির যুগ্ম- সূখ্য, সংগঠন আবু সাঈদ লিওন সহ অন্যান্যরা এসময় বক্তব্য দেন।