
অন্যান্য সবজির পাশাপাশি প্রথম বারের মতো জমিতে বিনা চাষে রসুন চাষ করে সফলতার স্বপ্নে বিভোর কৃষক নুর শাহ আলম। সে দিনাজপুরে বোচগঞ্জ উপজেলার রনগাঁও ইউনিয়নের ধনঞ্জয়পুর গ্রামের বাসিন্দা।
পারিবারিক চাহিদা পূরণে ও মুনাফার আশায় প্রতি বছর আলু, ভূট্টা, সরিষা, গম চাষ করে আসছেন। আর এর ধারাবাহিকতায় ইউটিউব দেখে এবার প্রথম বারের মতো এ রসুন চাষে আগ্রহী হন তিনি। কম খরচে অধিক লাভ ও পারিবারিক ভাবে চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে বাণিজ্যিক ভাবে শুরু করেন রসুন চাষ।
যেহেতু সারা বছর এর চাহিদা রয়েছে খাদ্য প্রক্রিয়ায় সে লক্ষ্যে মসলা জাতীয় এ ফসল চাষ করছেন তিনি। তার এ রসুন চাষ পদ্ধতি দেখে আগামীতে এটি চাষের ইচ্ছা ও আগ্রহ পোষন করেছেন আশেপাশের স্থানীয় অনেক কৃষক। দুর দুরান্ত থেকেও রসুন চাষের জমি দেখতে প্রতিদিন আসছেন অনেকেই।
নুর শাহ আলমের রসুন আবাদ দেখতে আশা কৃষক আশিকুর রহমান বলেন, আমি ফেসবুকের মাধ্যমে জানতে পেরে আজ আলম ভাইয়ের রসুন চাষ পদ্ধতি দেখতে আসলাম। দেখে খুব ভালো লাগল। আমিও আগামী বছর এক বিঘা জমিতে রসুন চাষ করবো।

স্থানীয় কৃষক পারভেজ বলেন, রসুন চাষ আমাদের এলাকায় কমই হয়। কিন্তু আলম ভাই এবার রসুন চাষ করে এলাকার সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে। আলম ভাইয়ের রসুন চাষ দেখে আগামীতে আমারও রসুন চাষ করার ইচ্ছা আছে।
তরুন উদ্যোক্তা নুর শাহ আলম বলেন, আমি যখন জমিতে বিনা চাষে রসুন রোপন করি তখন আমাকে এলাকার মানুষ পাগল বলেছিল। কিন্তু রসুনে আবাদ ভালো হওয়ায় এখন আমাকে নিয়ে প্রশংসা করে এলাকার মানুষ।
রসুন চাষের এই পদ্ধতি কোথায় পেলেন, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি জমিতে বিনা চাষে রসুন চাষ পদ্ধতি প্রথম নাটোরে বন্ধুর বাসায় দেখছি। সেখান থেকে আমার ভাবনা ছিল যে আমি এই পদ্ধতিতে রসুন চাষ করবো। তখন থেকেই আমি ইউটিউবে রসুন চাষ করার পদ্ধতি দেখা শুরু করি।

তিনি আরও বলেন, আমি সাড়ে চার বিঘা জমিতে রসুন চাষ করেছি। এই রসুন চাষ করতে আমার খরচ হয়েছে দুই লক্ষ পঞ্চাশ হাজার টাকা। আমি আশা করছি রসুন বিক্রি করে ১১ লক্ষ টাকার মতো পাবো। আগামীতে আরও বেশি পরিমান জমিতে রসুন চাষ করবো।
বোচাগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নয়ন কুমার শাহা বলেন, বোচাগঞ্জ উপজেলার সাদামহল ব্লাকে নুর শাহ আলম নামে একজন কৃষক সাড়ে চার বিঘা জমিতে প্রথম বারের মতো বিনা চাষে রসুন আবাদ করেছে। কৃষি সম্প্রসারণ এর পক্ষ থেকে আমরা তাকে কারিগরি পরামর্শ প্রদানসহ বিভিন্ন সার্বিক সহযোগীতা করে যাচ্ছি। আশা করছি ফলন ভালো হবে। কৃষকও লাভবান হবে। আমি নুর শাহ আলমের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই।’